ঢাকা ০২:১২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৩ মে ২০২৪, ২৯ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সংকটে বানভাসিরা, সরকার প্রতিশোধস্পৃহায়: খালেদা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৪:০১:০৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৩ অগাস্ট ২০১৭
  • ২১৯ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ দেশের উত্তর ও পূর্বাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। তিনি অভিযোগ করেছেন, দেশের মানুষ যখন বন্যার ভয়াবহ পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে, তারা যখন চরম সংকটে তখন সরকার প্রতিশোধস্পৃহায়। এজন্য সরকার বন্যা পরিস্থিতি সামাল দিতে পারছে না।

রবিবার দুপুরে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বিএনপি চেয়ারপারসন এসব কথা বলেন।

খালেদা জিয়া বলেন, ‘ভারী বর্ষণে তিস্তা, ধরলা, পুণর্ভবা, ব্রহ্মপুত্রসহ দেশের বেশ কয়েকটি নদী ফুলে ফেঁপে উঠে ভয়াবহ বন্যায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। কিন্তু এসব দুর্গত মানুষের জন্য সরকারের নেই কোনো জরুরি ত্রাণ তৎপরতা। বন্যা দুর্গত মানুষকে নিরাপদে উঁচু জায়গায় সরিয়ে নেয়ার কথা বলা হলেও কার্যকর কোনো ব্যবস্থা এখনো পর্যন্ত পরিলক্ষিত হয়নি।’

বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, ‘রংপুর বিভাগের অনেক এলাকার অসহায় মানুষ বন্যার তাণ্ডবে সর্বস্ব খুইয়ে হাহাকার করছে। সরকারের ‘লিপ সার্ভিস’ ছাড়া এই ভয়াবহ বন্যা মোকাবেলায় বাস্তব কোনো সার্ভিস নেই। জনগণকে উপেক্ষা করে ক্ষমতায় থাকাটাই।’

খালেদা জিয়া বলেন, ‘কয়েক দিনের ভারী বর্ষণে নদীগুলো ফুলে ফেঁপে ওঠায় দেশের বন্যা পরিস্থিতি এখন মারাত্মক রূপ ধারণ করেছে। এর উপর তিস্তার উজানে ভারতের গজলডোবা ব্যারেজের গেটগুলো খুলে দেয়ার ফলে তিস্তা নদীর পানি এখন বিপদসীমার সর্বকালের রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। বাংলাদেশের সীমানার ভেতরে তিস্তাসহ উত্তরাঞ্চলের বেশ কয়েকটি নদীর দুই তীরের বিস্তীর্ণ এলাকার ফসল, বসতবাটি, যোগাযোগব্যবস্থা এবং মানুষের জীবন-জীবিকা সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এছাড়া অন্যান্য নদীগুলোর উজানের দিক থেকে ধেয়ে আসা প্রবল পানির স্রোতে বাংলাদেশের ব্যাপক এলাকা এখন পানির নিচে।’

খালেদা বলেন, ‘হু হু করে বয়ে আসা বন্যার পানিতে পঞ্চগড়, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম, রংপুর, লালমনিরহাটের নদী সংলগ্ন এলাকাগুলোই শুধু নয়, জেলা শহরগুলোও তলিয়ে যাচ্ছে। শহরের পাকা রাস্তাতেও কোমর পানি ডিঙ্গিয়ে মানুষকে চলাচল করতে হচ্ছে। বন্যা উপদ্রুত মানুষ ঘর-বাড়ি-জোত-জমি হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে।’

বর্তমান সরকারের যেহেতু একমাত্র উদ্দেশ্য ক্ষতা, তাই জনদুর্ভোগকে তারা কখনোই আমলে নেয় না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

খালেদা বলেন, ‘কিছুদিন আগে হাওরে বন্যা ও পাহাড় ধসে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে অসংখ্য মানুষের প্রাণহানি হওয়ার পরও পরবর্তী দুর্যোগ মোকাবেলায় আশ্রয়হীন, ক্ষুধার্ত মানুষকে সহায়তা দিতে সরকার তাৎক্ষণিক প্রস্তুতি গ্রহণে কোনো ধরনের মনোযোগ দেয়নি।’

সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যার কারণে বর্তমান বন্যার তাণ্ডবে উপদ্রুত মানুষ এক চরম সংকটের মধ্যে নিপতিত হয়েছে। বিরোধী দলের প্রতি প্রতিশোধস্পৃহাই যদি সরকারের মূল চালিকাশক্তি হয়, তাহলে সেই সরকার কখনোই প্রাকৃতিক দুর্যোগ সামাল দিয়ে অসহায় জনগণের দুর্ভোগ লাঘব করতে পারে না।’

বিএনপি প্রধান সারাদেশে দলের সব পর্যায়ের নেতাকর্মী ও স্বচ্ছল মানুষকে অতিদ্রুত বন্যাদুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য উদাত্ত আহ্বা জানান।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

সংকটে বানভাসিরা, সরকার প্রতিশোধস্পৃহায়: খালেদা

আপডেট টাইম : ০৪:০১:০৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৩ অগাস্ট ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ দেশের উত্তর ও পূর্বাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। তিনি অভিযোগ করেছেন, দেশের মানুষ যখন বন্যার ভয়াবহ পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে, তারা যখন চরম সংকটে তখন সরকার প্রতিশোধস্পৃহায়। এজন্য সরকার বন্যা পরিস্থিতি সামাল দিতে পারছে না।

রবিবার দুপুরে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বিএনপি চেয়ারপারসন এসব কথা বলেন।

খালেদা জিয়া বলেন, ‘ভারী বর্ষণে তিস্তা, ধরলা, পুণর্ভবা, ব্রহ্মপুত্রসহ দেশের বেশ কয়েকটি নদী ফুলে ফেঁপে উঠে ভয়াবহ বন্যায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। কিন্তু এসব দুর্গত মানুষের জন্য সরকারের নেই কোনো জরুরি ত্রাণ তৎপরতা। বন্যা দুর্গত মানুষকে নিরাপদে উঁচু জায়গায় সরিয়ে নেয়ার কথা বলা হলেও কার্যকর কোনো ব্যবস্থা এখনো পর্যন্ত পরিলক্ষিত হয়নি।’

বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, ‘রংপুর বিভাগের অনেক এলাকার অসহায় মানুষ বন্যার তাণ্ডবে সর্বস্ব খুইয়ে হাহাকার করছে। সরকারের ‘লিপ সার্ভিস’ ছাড়া এই ভয়াবহ বন্যা মোকাবেলায় বাস্তব কোনো সার্ভিস নেই। জনগণকে উপেক্ষা করে ক্ষমতায় থাকাটাই।’

খালেদা জিয়া বলেন, ‘কয়েক দিনের ভারী বর্ষণে নদীগুলো ফুলে ফেঁপে ওঠায় দেশের বন্যা পরিস্থিতি এখন মারাত্মক রূপ ধারণ করেছে। এর উপর তিস্তার উজানে ভারতের গজলডোবা ব্যারেজের গেটগুলো খুলে দেয়ার ফলে তিস্তা নদীর পানি এখন বিপদসীমার সর্বকালের রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। বাংলাদেশের সীমানার ভেতরে তিস্তাসহ উত্তরাঞ্চলের বেশ কয়েকটি নদীর দুই তীরের বিস্তীর্ণ এলাকার ফসল, বসতবাটি, যোগাযোগব্যবস্থা এবং মানুষের জীবন-জীবিকা সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এছাড়া অন্যান্য নদীগুলোর উজানের দিক থেকে ধেয়ে আসা প্রবল পানির স্রোতে বাংলাদেশের ব্যাপক এলাকা এখন পানির নিচে।’

খালেদা বলেন, ‘হু হু করে বয়ে আসা বন্যার পানিতে পঞ্চগড়, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম, রংপুর, লালমনিরহাটের নদী সংলগ্ন এলাকাগুলোই শুধু নয়, জেলা শহরগুলোও তলিয়ে যাচ্ছে। শহরের পাকা রাস্তাতেও কোমর পানি ডিঙ্গিয়ে মানুষকে চলাচল করতে হচ্ছে। বন্যা উপদ্রুত মানুষ ঘর-বাড়ি-জোত-জমি হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে।’

বর্তমান সরকারের যেহেতু একমাত্র উদ্দেশ্য ক্ষতা, তাই জনদুর্ভোগকে তারা কখনোই আমলে নেয় না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

খালেদা বলেন, ‘কিছুদিন আগে হাওরে বন্যা ও পাহাড় ধসে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে অসংখ্য মানুষের প্রাণহানি হওয়ার পরও পরবর্তী দুর্যোগ মোকাবেলায় আশ্রয়হীন, ক্ষুধার্ত মানুষকে সহায়তা দিতে সরকার তাৎক্ষণিক প্রস্তুতি গ্রহণে কোনো ধরনের মনোযোগ দেয়নি।’

সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যার কারণে বর্তমান বন্যার তাণ্ডবে উপদ্রুত মানুষ এক চরম সংকটের মধ্যে নিপতিত হয়েছে। বিরোধী দলের প্রতি প্রতিশোধস্পৃহাই যদি সরকারের মূল চালিকাশক্তি হয়, তাহলে সেই সরকার কখনোই প্রাকৃতিক দুর্যোগ সামাল দিয়ে অসহায় জনগণের দুর্ভোগ লাঘব করতে পারে না।’

বিএনপি প্রধান সারাদেশে দলের সব পর্যায়ের নেতাকর্মী ও স্বচ্ছল মানুষকে অতিদ্রুত বন্যাদুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য উদাত্ত আহ্বা জানান।